তাঁর মতে, ‘‘বিজয়ের সময়টা আনন্দের৷ আর সেই সময় বিজয়ের চিহ্ন ‘ভি' দেখালে আনন্দটা আরও বেড়ে যায়৷ কিন্তু সব জায়গায় ‘ভি' চিহ্ন দেখানো শুভ নয়৷ এটা অনেক সময় ক্ষতির কারণও হতে পারে৷ যেমন কসাই কাদের মোল্লার ‘ভি' চিহ্ন মেনে নিতে পারেননি দেশপ্রেমিক মানুষজন৷ তাই পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলায় খালাস প্রাপ্তদের জন্য এটা আনন্দের মুহূর্ত হলেও এই ‘ভি' চিহ্নটা কিন্তু বেমানান লেগেছে৷ কারণ মঙ্গলবার ইতিহাসের জঘন্যতম একটি ঘটনার রায় হয়েছে৷ স্বজন হারানোদের চোখে ছিল জল৷ তাঁদের চোখের জলের সামনে এই ‘ভি' চিহ্ন কিছুতেই আনন্দের হতে পারে না৷ এতে স্বজন হারাদের বেদনা আরও বহুগুণ বেড়েছে৷''
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
দু’দলের দ্বন্দ্ব
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নির্দিষ্ট হয়েছে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে৷ তবে মুখ্য বিরোধী দল বিএনপি এখনো নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি নয়৷ তারা চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, শাসক আওয়ামী লীগের কাছে যা সংবিধান লঙ্ঘনের সমান৷
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
জাতিসংঘ চায় সংলাপ
জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই দুই বিবাদী জোটের মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে৷ মহাসচিব বান কি-মুন গত ২৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে কথাবার্তা বলেছেন৷ জাতিসংঘের মহাসচিব উভয় নেতার প্রতি চলতি রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ অবসানের জন্য আলাপ-আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন৷
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
হাসিনা চান সংসদে আলোচনা
জাতিসংঘ বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মহাসচিবের ফোনালাপের কোনো খুঁটিনাটি প্রকাশ করেনি৷ তবে বাংলাদেশের একাধিক দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী হাসিনা ‘‘জাতিসংঘের প্রধানকে জানিয়েছেন যে, তিনি সংবিধান অনুযায়ী সরকারের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা করছেন৷’’ বিরোধীপক্ষ যদি গোটা প্রসঙ্গটি সংসদে আলোচনা করার কোনো প্রস্তাব দেয়, তবে তিনি তাকে স্বাগত জানাবেন, এমন আভাসও দিয়েছেন হাসিনা৷
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
সরকারের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনে বিএনপির ‘না’
বান কি-মুনের সঙ্গে ফোনালাপে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াও সংকট সমাধানে সংলাপের সপক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন, কিন্তু এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ‘‘বিরোধীপক্ষ আওয়ামী লীগ সরকারের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না৷’’
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি ও কেন?
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল কাজ হলো মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা৷ ১৯৯১ সালে এই পদ্ধতি চালু করা হয় কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সেই পদ্ধতি বাতিল করে৷ বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী পক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছে৷
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
জার্মানি সংলাপ সমর্থন করে
সংলাপকে বাংলাদেশের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক জোটের মধ্যে অচলাবস্থা নিরসনের একমাত্র পন্থা বলে মনে করে জার্মানি৷ ‘ঢাকা কুরিয়ার’ নামক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ঢাকায় জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. আলব্রেশট কনৎসে বলেছেন, ‘‘দু’টি মুখ্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ হলো বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা সমাধানের একমাত্র পথ৷’’
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ডাক দিলেন
বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস একটি ‘‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ (নির্বাচনকালীন) সরকার’’ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি তাঁর প্রকাশ্য সমর্থন ব্যক্ত করেছেন৷ গত ২২ আগস্ট ইউনূস একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘নির্বাচন অতি অবশ্য হওয়া উচিত এবং তা একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হওয়া উচিত৷’’
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)
হাসিনা সরকারের সৃষ্ট আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বা আইসিটি-র উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার৷ কিন্তু তা শাসকদল এবং বিরোধীপক্ষের মধ্যে একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আইসিটি এখন পর্যন্ত ছ’জন অভিযুক্তকে শাস্তি দিয়েছে৷ বিরোধীপক্ষ এই বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত আখ্যা দিয়েছে৷ তাদের মতে এই প্রক্রিয়ার বাস্তবিক উদ্দেশ্য ন্যায়বিচার নয়, পুরাতন শত্রুতার প্রতিশোধ৷
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
আন্তর্জাতিক সমালোচনা
হিউম্যান রাইটস ওয়াচও আইসিটি-র সমালোচনা করেছে৷ এইচআরডাব্লিউ বিবৃতিতে বলেছে, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক প্রধান গোলাম আযমের বিচার প্রক্রিয়া ‘‘গভীরভাবে ত্রুটিপূর্ণ’’ ছিল৷ প্রতিক্রিয়া হিসেব সরকারি কৌঁসুলির তরফ থেকে এইচআরডাব্লিউ-এর বিরুদ্ধে আদালতের অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ ইতিমধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এইচআরডাব্লিউ-এর ‘‘একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’’ রয়েছে৷
-
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
ট্র্যাক রেকর্ড
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসে৷ বিদ্যুৎ উৎপাদন কিংবা কৃষি খাতে সরকারের সাফল্যের খতিয়ান যাই হোক না কেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর হাসিনা সরকারের অন্য সব সাফল্য ঐ একটি কেলেঙ্কারির আড়ালে ধামাচাপা পড়ে গেছে৷ আগামী নির্বাচনেও পদ্মা সেতু প্রকল্প প্রসঙ্গটি প্রভাব ফেলতে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷
লেখক: আরাফাতুল ইসলাম / এসি
সাতক্ষীরা থেকে পাঠকবন্ধু বাপি দেবনাথ হরতাল নিয়ে তাঁর মতামত জানিয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘হরতাল শব্দের অভিধানিক অর্থ আসলে কি? আমরা বাংলা অভিধান থেকে হরতাল শব্দের অর্থ পাই যে, বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ প্রকাশের জন্য হাট-বাজারের কাজকর্ম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা৷ আমরা এখন থেকে কয়েক দশক আগেও দেখেছি যে, হরতাল হলে জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করত৷ কিন্তু বর্তমান সময়ের হরতাল বেশ ভিন্ন৷ বর্তমান সময়ের হরতাল মানে মারামারি, কাটাকাটি, বোমাবাজি ইত্যাদি৷ যেখানে কিনা হারাতে হচ্ছে অকাতরে অনেক প্রাণ৷ হয়ত কারো ভাই, হয়ত কোনো মায়ের ছেলেকে জীবন দিতে হচ্ছে৷ কোনো বোনকে পুড়ে দগ্ধ হতে হচ্ছে শুধুমাত্র এই হরতালের কারণে৷ যেখানে নষ্ট হচ্ছে দেশের কোটি কোটি টাকার সম্পদ৷ হয়ত বা কারো লাভ আছে এই হরতালে৷ কিন্তু আমাদের জনগণের কি কোনো লাভ আছে? সত্যি এমন এক আজব দেশে আমরা বাস করি৷ আসলে হরতাল শব্দের অর্থ এখন ব্যাপক প্রসারিত৷ আমার যদি ক্ষমতা থাকত তাহলে বাংলা অভিধান থেকে হরতাল শব্দের অর্থ আমি পাল্টে দিতাম৷'' বাপি দেবনাথ ইমেলের শুরুতে ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের সবাইকে হালকা শীতের পরশ বোলানো উষ্ণ ভালবাসা জানিয়েছেন৷
আরেক পাঠক নবী নেওয়াজ মনে করেন, ‘‘ফোনালাপ প্রকাশ আলোচনা বিঘ্নিত করেছে৷ ক্ষমতাসীন সরকারের লোক দেখানো টেলিফোন সংলাপ গণমাধ্যমে প্রকাশ করে সরকার রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা করেনি৷ প্রথম থেকেই একটা ষড়যন্ত্র ছিল সরকারের এই টেলিফোন সংলাপ নিয়ে, তাই ঐ সময় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে এক ডজন নেতা ও মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন, এবং তাঁরাই প্রধানমন্ত্রীকে কথার পেছনে কথা বলাচ্ছিলেন৷ সেখানে ক্যামেরাম্যান ছিলেন এবং সমস্ত সংলাপ রেকর্ড করা হয়েছিল, যা পরদিন প্রকাশ করা হয়েছে৷ ঐদিনই তথ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন যে, গণমাধ্যমে সমস্ত টেলিফোন সংলাপ প্রকাশ করা হবে এবং তাই হলো৷... এটাতো কোনো সাধারণ মানুষের টেলিফোন সংলাপ নয়! সরকার কেন এবং কি উদ্দ্যেশে এই টেলিফোন সংলাপ প্রকাশ করে নিজের কান নিজেই কাটলেন তা সরকারই জানেন! তবে বিচক্ষণ সুধীজন বলবেন যে এটা উচিত হয়নি, সরকার একটা অপরাধ করেছেন৷''
-সবার জন্যও রইল অনেক শুভেচ্ছা আর লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: জাহিদুল হক