ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু মোশারফ হোসেন হিন্দুদের গরুর মাংস খাওয়ায় কোনো সমস্যা দেখছেন না৷ তাঁর মন্তব্য, ‘‘গরুর মাংস খেলে সমস্যা কোথায়? আর এ নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন নেই৷ যার ভালো লাগবে খাবে, আর যার ভাল লাগবে না খাবে না৷ একসময় হিন্দুরাও গরুর মাংস খেত৷ এখন খায় না, শেষ৷''
হাসিবুল কবিরও পাঠক মোশারফের সাথে একমত৷ তবে তিনি মনে করেন এসব বিষয় নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে বরং আরো সিরিয়াস বিষয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত৷ তাঁর মতে, ‘‘ভারতের উচিত গরুর পিছনে না ছুটে অনাহারে থাকা মানুষগুলির দিকে তাকানো৷''
মোহাম্মদ আনোয়ার লিখেছেন, ‘‘ভারত যখন মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, অ্যামেরিকায় গোমাংস রপ্তানি করে তখন গরু তাদের দেবতা হয়না আর যখন ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মানুষ গরু খায় তখন গরু তাদের দেবতা হয়ে যায়? বড়-ই অদ্ভুত জাতি ভারতীয় হিন্দুরা৷''
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
প্রতিদিন মাংস
জার্মানদের খাবারের তালিকায় প্রায় প্রতিদিনই মাংস থাকা চাই৷ মাংস রান্না বা সেদ্ধ অবস্থায়, এছাড়া সসেজ, সালামি, হ্যাম – কোনো না কোনোভাবে তাঁদের খাবার টেবিলে থাকে মাংস৷ তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয় এবং এতে নানা সমস্যা দেখা যায়, সে কথা জেনেও তাঁরা মাংস পছন্দ করেন৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
সপ্তাহে ৬০০ গ্রাম মাংস
একজন প্রাপ্তবয়স্ক জার্মান গড়ে দিনে ১৫০ গ্রাম মাংস খান, অর্থাৎ সপ্তাহে যা ১০০০ গ্রামেরও বেশি৷ অথচ ডাক্তাদের মতে, একজন মানুষ সপ্তাহে ৬০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন এবং এর বেশি খাওয়া একেবারেই উচিত নয় যদি সে মাংস ‘রেড মিট’ হয়৷ গরু, ছাগল, শূকর, ভেড়া এবং ঘোড়ার মাংসকে ‘রেডমিট’ বলা হয়৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়
ডাক্তারদের মতে, কেউ দিনে ১০০ গ্রামের বেশি ‘রেডমিট’ খেলে তাঁর হৃদরোগের ঝুঁকি এবং পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়৷ সে তুলনায় সাদা মাংস, অর্থাৎ মুরগি বা পাখির মাংস খেলে ঝুঁকি অনেক কম৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
পরিমিত পরিমাণ
মাংসতে রয়েছে প্রোটিন, আয়রন এবং ভিটামিন ‘বি’৷ জার্মানির পট্সডাম রেব্র্যুক-এর খাদ্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড.গিজেলা ওলিয়াস বলেন, রেডমিট হৃদরোগ এবং পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় ঠিকই৷ তবে মাংসের তৈরি সসেজ কিন্তু এই ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় আরো বেশি৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিটকাটার
জার্মান মাংসের দোকানের কর্মীরা প্রায় সকলেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত৷ এখানে যে কোনো জায়গায় কাজ করতে গেলে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকতে হয় – তা সে মাংস কাটার কাজ হোক, অথবা অন্য কোনো কাজ৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
গ্রিল মাংস
আগুনে পোড়ানো বা গ্রিল করা রসালো মাংস দেখতে যেমন লোভনীয়, তেমন খেতেও দারুণ মজা৷ তাই গ্রীষ্মকালে জার্মানরা প্রায়ই গ্রিল পার্টির আয়োজন করেন, যেখানে প্রচুর পরিমাণে মাংস খাওয়া হয়৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
আরো গ্রিল
নানাভাবে বিভিন্ন পশুর বিভিন্ন অংশের মাংস গ্রিল করা হয়৷ তবে জার্মানরা বেশিরভাগই গ্রিল করেন শূকরের মাংস৷ এসব লোভনীয় গ্রিল দেখে কারো কি মনে থাকার কথা যে, একজন মানুষের দিনে মাত্র ১০০ গ্রাম মাংস খাওয়া উচিত?
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
দামে সস্তা
গরু বা খাসির মাংসের তুলনায় শূকরের মাংস দামের দিক দিয়ে অনেক সস্তা৷ আর সেজন্যই হয়ত শূকরের মাংস জার্মানিতে বেশি খাওয়া হয়ে থাকে৷ এবং সেটা হয়ে থাকে নানাভাবেই!
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
পাউরুটির সাথেও মাংস
জার্মানরা সকালের নাস্তা বা রাতে রুটির সাথেও মাংসের সসেজ বা মাংসের স্লাইস খান৷ এছাড়া, বিভিন্ন দোকানে, ক্যাফেতে নানা ধরনের রুটির মধ্যে ‘স্যান্ডউইচ’ আকারে মাংস ভরে খাবারও চল আছে জার্মানিতে৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
ড্যোনার কাবাব
জার্মানিতে অনেক তুর্কি রেস্তোরাঁ আছে এবং এসব রেস্তোরাঁর বেশিরভাগ খাবারই মাংস দিয়ে তৈরি৷ বিশেষ করে ‘ড্যোনার কাবাব’ তরুণদের কাছে বেশ প্রিয়৷ এটা একরকম পাতলা রুটির মধ্যে সবজি এবং গ্রিল করা মাংস দিয়ে তৈরি করে হয়৷ বলা বাহুল্য, জার্মানিতে ৪০ লাখ মুসলমানের বাস, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই এসেছেন তুরস্ক থেকে৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
হালাল মাংস
জার্মানিতে তুর্কি দোকানগুলোতে হালাল মাংসও পাওয়া যায়৷ সেসব দোকানে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসলমানসহ জার্মানরাও মাংস কেনেন৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
পাঠক ফজলে মনির চৌধুরী অবশ্য সোজাসুজি স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করেই তার মন্তব্যে লিখেছেন, ‘‘হাই প্রেসার আর হার্টের রোগীদের ডাক্তাররা বিফ খেতে নিষেধ করেন৷''
পিনাকি গুহ জাত নিয়ে মাথা ঘামান না৷ তাঁর সোজা কথা, ‘‘আমি তো গরু, শুকর সবই খাই, কই আমার তো জাত যায়নি৷''
ইফতি খানের অনেক হিন্দু বন্ধুই গরুর মাংস খান৷ তিনি বলছেন, ‘‘এটা নিয়ে কথা বাড়ানোর দরকার কি?''
‘‘পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক মুসলিমও শুকরের মাংস খায়,'' এই মন্তব্য পাঠক চাকমার৷
রেজায়ুল মোল্লার সোজা কথা, ‘‘ভালো লাগে তাই খায়৷''
আমাদের পুরনো বন্ধু সোমেন চৌধুরী বলছেন, মাংস খাওয়া ধর্ম, মন আর বিবেকের ইস্যু মাত্র৷ কিন্তু আগেতো মানুষ...তারপর ধর্ম ৷ আসুন কারও নিন্দা না করে সবাই সবাইকে ভালবাসি, শ্রদ্ধা করি তাতেই সবার মঙ্গল৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: জাহিদুল হক