দেখতে দেখতে ৬০ বছর পার করলো ডয়চে ভেলে৷ শর্ট ওয়েভে থেকে শুরু করে মাল্টিমিডিয়া৷ পরিবর্তন তো কম হয় নি! এই পরিবর্তনগুলো সরাসরি যাঁদের ওপর প্রভাব ফেলেছে, তাঁরা আর কেউ নয়, ডিডাব্লিউ’রই কর্মী৷ তাই এবার তাঁদেরই ক’জনের কথা...
দাই ইং, চীনা বিভাগ
‘‘১৯৯৬ সালে আমি যখন ডয়চে ভেলেতে কাজ শুরু করি তখন শুধু শর্ট ওয়েভের মাধ্যমে অনুষ্ঠান প্রচারিত হতো৷ আমার এখনো মনে পড়ে সেই সময় আমরা ‘ফ্লপি ডিস্ক' ব্যবহার করতাম৷
আর সম্পাদনার যাবতীয় কাজের জন্য আমাদের আইটি বিভাগের কর্মীদের সহযোগিতা নিতে হতো৷ কিন্তু এখন, সম্পাদনা সহ অনেক কাজই আমরা নিজেদের টেবিলে বসে করি৷ এছাড়া, এখন তো ভিডিও এবং অনলাইনের মাধ্যমে দর্শক শ্রোতাদের একেবারে কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ডিডাব্লিউ৷ খুব কাছ থেকে এই পরিবর্তন দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার৷ এরপরও ডয়চে ভেলেকে আমার সবসময় তরুণ মনে হয়৷ কারণ যে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে, সেই তো তরুণ!''
শারাম আহাদি, ফার্সি বিভাগ
‘‘গণমাধ্যম জগতে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন আসছে এবং তা খুব দ্রুত গতিতে৷ এই অবস্থায় প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকাটা সত্যিই বড় এক চ্যালেঞ্জ৷ আমরা ফার্সি বিভাগের কর্মীরা সেই কাজটা ভালোভাবে করে যাওয়ার চেষ্টা করছি৷ এক্ষেত্রে আমরা অনেক সফলতা অর্জন করেছি বলে আমি মনে করি৷''
লাভিনিয়া পিতু, রোমানীয় বিভাগ
‘‘২০১০ সালে আমি রোমানিয়ার কান্তেমির গেওর্গিও-র উপর একটা প্রতিবেদন লিখেছিলাম৷ গেওর্গিও তখন মোটা কাগজ দিয়ে বিশেষ এক ধরণের চশমা তৈরি করে খোলা বাজারে বিক্রি করতেন৷ আমার প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর, জার্মানি ও রোমানিয়ার গণমাধ্যমে গেওর্গিও-কে নিয়ে মাতামাতি শুরু হয় এবং তাঁর চশমা বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে৷ বর্তমানে গেওর্গিও তাঁর চশমা ইউরোপ ছাড়াও এশিয়ার বাজারে বিক্রি করছেন৷ গেওর্গিও এখন আমাকে বলেন, ‘‘আমার এত সাফল্যের কারণ আসলে তুমি৷ তুমিই যে আমার কথা বলেছিলে৷''
নুরুননাহার সাত্তার, বাংলা বিভাগ
দীর্ঘ ২৮ বছর কাজ করছি ডয়চে ভেলেতে৷ শ্রোতা, পাঠকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা এবং সম্পর্ক সুদৃঢ় করার কাজটি সবসময়ই আনন্দের সাথে করেছি৷ সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে একসময় চিঠির জায়গা নিলো ই-মেল, এসএমএস, আর তারপর সরাসরি ফেসবুকে যোগাযোগ৷
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এখন মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টে কাজ করেও আনন্দ পাচ্ছি৷ আমার মনে হয়, সময়ের সাথে চলতে পারাটাই বড় কথা৷ মনে নেই কবে, তবে অনেক বছর আগে একসময় শুনেছিলাম, ডয়চে ভেলে থেকে নাকি বাংলায়ও টিভি অনুষ্ঠান প্রচার হবে৷ তখন অনেকটা স্বপ্নের মতো মনে হয়েছিল একথা৷ কিন্তু মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই সেই স্বপ্ন বাস্তব রূপ নিয়েছে৷ ডয়চে ভেলের মতো একটি আন্তর্জাতিক মাল্টিমিডিয়াতে কাজ করতে এসে বিশ্বটাকে অনেকটাই ছোট মনে হয়েছে আমার কাছে৷