‘‘জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান বিশ্বের একটি বড় চ্যালেঞ্জ৷ এর প্রভাব এখন বাংলাদেশে লক্ষ্যণীয়৷ আমার প্রত্যাশা, সুন্দরবন রক্ষা সহ বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য খুব দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক৷ যাতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপর কোনো প্রভাব না আসে৷ এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি কামনা করছি৷'' – বনের জলবায়ু সম্মেলনেকে ঘিরে আমাদের ফেসবুক পাতায় এই মন্তব্য করেছেন এম এ বারিক৷ এছাড়া তিনি অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের সঙ্গে লাইভ আলোচনায় রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে সরকারের কী ধরনের পরিবেশ বান্ধব পরিকল্পনা রয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন৷
‘‘বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ইস্যু খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷'' – এই মন্তব্য সবুজ মাহমুদের৷ তাঁর প্রত্যাশা, কপ২৩-তে সুন্দরবনের সমৃদ্ধকরণকে গুরুত্ব দেয়া হবে৷''
-
বনে কয়লা বিরোধী সমাবেশ
সিটি সেন্টার থেকে শুরু
জার্মানির প্রাক্তন রাজধানী বন শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে কয়লা বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়৷ এই তিন নারীর মতো অনেকেই মুখে রং মেখে কয়লা বিরোধী প্লাকার্ড ও পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন৷
-
বনে কয়লা বিরোধী সমাবেশ
ভেন্যুর দিকে যাত্রা
বন শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন কপ২৩-এর ভেন্যুর দিকে অগ্রসর হন বিক্ষোভকারীরা৷
-
বনে কয়লা বিরোধী সমাবেশ
বিক্ষোভকারী কতজন?
জার্মানির জাতিসংঘ শহর হিসেবে পরিচিত বনে শনিবারের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এগারো হাজারের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ তবে আয়োজকরা জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা ২৫,০০০৷
-
বনে কয়লা বিরোধী সমাবেশ
ব়্যালিতে ট্রাম্প!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোশ পরে বনের কয়লা বিরোধী সমাবেশে অংশ নেন এক বিক্ষোভকারী৷ সম্প্রতি প্যারিস চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প৷
-
বনে কয়লা বিরোধী সমাবেশ
ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ডে নানা দাবি
কয়লা বিরোধী সমাবেশে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীদের হাতে হাতে ছিল নানা দাবি সংবলিত ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড৷
-
বনে কয়লা বিরোধী সমাবেশ
একশো’র মতো সংগঠন
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধসহ নানা দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে জার্মানির সবুজ দল এবং বাম দলের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল৷ একশো’র মতো পরিবেশবাদী সংগঠনও অংশ নেন কপ২৩-কে ঘিরে আয়োজিত এই বিক্ষোভে৷
-
বনে কয়লা বিরোধী সমাবেশ
তরুণদের মিলনমেলা
কয়লা বিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বড় অংশই ছিল বয়সে নবীন৷ বিক্ষোভকারীদের উৎসাহ যোগাতে নাচগানের আয়োজনও ছিল সমাবেশে৷
-
বনে কয়লা বিরোধী সমাবেশ
জৈব উপায়ে চাষাবাদের দাবি
কয়লা বিরোধী সমাবেশে জৈব উপায়ে চাষাবাদ ও ‘ফ্যাক্টরি ফার্মিং’ বন্ধের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা৷
-
বনে কয়লা বিরোধী সমাবেশ
ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোশ পরা এক ব্যক্তি সমাবেশ স্থলে স্ট্যাচু অব লিবার্টির রেপ্লিকা দেখাচ্ছেন, যেখানে মশাল থেকে বের হচ্ছিল ধোঁয়া আর স্ট্যাচুর গায়ে লেখা ছিল ‘ফ্রিডম টু পলিউট’৷
লেখক: মোস্তাফিজুর রহমান
ফেসবুক লাইভ নিয়ে মনির হোসেনের প্রশ্ন, ‘‘সাধারণ জনগণকে এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত করতে কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন আপনারা? আর এই আন্দোলনে যাঁরা যুক্ত হবে তাঁদের সবসময় উদবুদ্ধ করতে কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে?''
‘‘রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র আমাদের দরকার আছে৷'' – এই মন্তব্য মো. সবুজ খান রবির৷
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়েআন্দোলনকারীরা জনগণকে সম্পৃক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে ধারণা মর্তুজা চৌধুরীর৷
‘‘রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যাপারে ভারতের স্বার্থ আছে বলে শুনেছি, এটা কতখানি সত্য?'' প্রশ্ন করেছেন এ এইচ পারভেজ৷
‘‘সরকার কেন এটা করছে? এটা যদি সত্যি জনগণের স্বার্থে হতো, তাহলে এমন আত্মঘাতী প্রকল্প সরকার বাস্তবায়ন করত না!'' মনে করেন পাঠক নূর আহমেদ৷
জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাব সম্পর্কে জার্মানরা বেশ সচেতন৷ তা এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা কতটুকু? ফেসবুক লাইভে হারুন রশীদের এই প্রশ্ন ছিল পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নুরুল কাদিরের কাছে৷
‘‘রোহিঙ্গারা যে পাহাড় ও বন জঙ্গল ধ্বংস করে দিল, তখন আপনি চুপ কেন?'' ফেসবুক লাইভে আনু মুহাম্মদের কাছে উজ্জ্বল শেখের প্রশ্ন৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
সুন্দরবন কত দূরে
রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা থেকে সুন্দরবনের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দূরত্ব মাত্র ১৪ কিলোমিটার৷ তবে বাংলাদেশ সরকারের হিসেবে প্রকল্প এলাকা থেকে সুন্দরবনের দূরত্ব নাকি ৬৯ কিলোমিটার৷ ইউনেক্সো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন কি সত্যিই রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নিরাপদ দূরত্বে রয়েছে?
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
মংলার পর থেকেই সুন্দরবনের শুরু
মংলা শহরের পশ্চিম পাড়ে ঢাংমারী এলাকা থেকেই মূলত সুন্দরবনের শুরু৷ এ এলাকা থেকেই বেঙ্গল টাইগারসহ সুন্দরবনের প্রায় সব বন্যপ্রাণীর বিচরণ আছে৷ রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা থেকে এই ঢাংমারীর দূরত্ব মাত্র ১৪ কিলোমিটার৷
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
দীর্ঘ সময় ধরে নির্মাণ
রামপালে ৬৬০ মেগাওয়াটের দু’টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সময় লাগবে প্রায় সাড়ে চার বছর৷ এই দীর্ঘ সময়ে নির্মাণ কাজের ফলে সুন্দরবনের পরিবেশের উপর প্রভাব পড়বেই৷
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন
নির্মাণ সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নদী পথে পরিবহন করার ফলে বাড়তি নৌযান চলাচল, তেল নিঃসরণ, শব্দদূষণ, আলো, বর্জ্য নিঃসরণ ইত্যাদি কারণে সুন্দরবনের ইকো সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
বায়ুদূষণ
রামপালের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড নির্গত হবে, যার সরাসরি শিকার হবে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন৷
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
ছাই দূষণ
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বছরে ৪৭ লক্ষ ২০ হাজার টন কয়লা পুড়িয়ে প্রায় ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টন ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ও ২ লক্ষ টন ‘বটম অ্যাশ’ উৎপাদিত হবে৷ এই ফ্লাই অ্যাশ, বটম অ্যাশ, তরল ঘনীভূতি ছাই বা স্লারি ব্যাপক মাত্রায় সুন্দরবনের পরিবেশ দূষণ করবে৷
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
কয়লা পরিবহন
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পোড়ানোর জন্য হাজার হাজার টন আমদানীকৃত কয়লা সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে পরিবহন করা হবে৷ যে কারণে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে প্রায় সারা বছর ধরে কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ চলাচল করে গোটা সুন্দরবনের পরিবেশকে ক্ষতাগ্রস্ত করবে৷
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
কয়লা খালাস
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সমুদ্র পথে যে কয়লা আমদানী করা হবে, সেগুলো সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজের মাধ্যমে পশুর নদীর বিভিন্ন এলাকায় খালাস করার কারণে প্রচুর কয়লা সরাসরি নদীতে পড়তে পারে, যা সৃষ্টি করবে দূষণের৷
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
জাহাজ চলাচলে জীব বৈচিত্রের ক্ষতি
কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ থেকে কয়লা, তেল, ময়লা আবর্জনা, দূষিত পানিসহ বিপুল পরিমাণ বর্জ্য নিঃসৃত হয়ে নদী-খাল-মাটিসহ গোটা সুন্দরবন দূষিত হবে৷ এছাড়া জাহাজের ঢেউয়ে দু’পাশের তীরের ভূমি ক্ষয় হবে, রাতে জাহাজ চলাচল করলে সার্চ লাইটের আলো মারাত্বক প্রভাব ফেলবে বন্যপ্রাণীদের জীবনচক্রের উপরও৷
-
সুন্দরবনে রামপালের ক্ষতি
রামপাল সবদিক দিয়েই ক্ষতিকর
তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ মনে করেন রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সুন্দরবন যে কতটা ক্ষতির সম্মুখীন হবে, তা জানতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই৷ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু নিজেই ক্ষতি করছে না, একে কেন্দ্র করে নানান যে ব্যবসা বাণিজ্য আসছে, সেগুলোও সুন্দরবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে৷
লেখক: মোস্তাফিজুর রহমান