সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে দূরপাল্লায় চালকদের সাথে বিকল্প চালক রাখার নির্দেশনা কার্যকর হলে দুর্ঘটনা কিছুটা হলেও কমবে বলে বিশ্বাস করেন ডয়চে ভেলের পাঠক মোর্শেদ লিখন৷ ডয়চে ভেলের পুরনো বন্ধু আশরাফুল ইসলামও কিন্তু এই উদ্যেগটি সমর্থন করেছেন৷
বন্ধু বুলবুল হোসেনও প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সমর্থন করেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘ভালো উদ্যোগ৷ এতে চালকদের কর্মসংস্থান হবে৷'' তবে তাঁর ধারণা, তা করতে গিয়ে গাড়ির মালিকরা গাড়ির ভাড়া বাড়িয়ে দেবে এবং এতে সমস্যা হবে যাত্রীদের৷
সাজেদুর রহমানের মতে, এই উদ্যেগ হয়তো কিছুটা কাজে দেবে, তবে এটা কোনো সমাধান হতে পারেনা৷
অয়ন দাসের মন্তব্য, ‘‘ভালো সিদ্ধান্ত৷'' পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন,‘‘ যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে বাণিজ্যিক গাড়ির ড্রাইভারদের জন্য লগবুক থাকে৷ এবং সেখানে তাঁরা কতক্ষণ ড্রাইভ করছেন, কতক্ষণ বিশ্রাম নিচ্ছেন তা লিপিবদ্ধ করতে হয়৷''
-
আলোচিত যত সড়ক দুর্ঘটনা
তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীর
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের এক গ্রামে ছবির শুটিং স্পট দেখে ঢাকা ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন খ্যাতিমান চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ এবং শহিদ বুদ্ধিজীবী, নাট্যকার মুনীর চৌধুরীর ছেলে এটিএন নিউজের প্রধান নিবার্হী মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন৷ এ দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ ও শিল্পী ঢালী আল-মামুনসহ চারজন আহতও হয়েছিলেন৷
-
আলোচিত যত সড়ক দুর্ঘটনা
ক্ষতিপূরণ
দুর্ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিহতদের পরিবারের সদস্যরা বাস মালিক, চালক ও বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে দু'টি মামলা দায়ের করেন৷ সেই মামলার একটির চূড়ান্ত রায়ে গত ডিসেম্বরে তারেক মাসুদের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবারকে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট৷ আগামী তিন মাসের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়া হলেও এখনও তা কার্যকর হয়নি৷
-
আলোচিত যত সড়ক দুর্ঘটনা
মোজাম্মেল হোসেন মন্টু
দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক ছিলেন৷ ১৯৮৯ সালে মতিঝিলের আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে বাংলাদেশ বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজের গাড়ির ধাক্কায় নিহত হন তিনি৷ এরপর তাঁর স্ত্রী রওশন আরা ১৯৯১ সালে আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেন৷ ২০১৪ সালের ২০ জুলাই সাংবাদিক মন্টুর পরিবারকে ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ৷ তবে তা এখনও পাননি মন্টুর পরিবার৷
-
আলোচিত যত সড়ক দুর্ঘটনা
জাহানারা কাঞ্চন
তিনি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী ছিলেন৷ ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর স্বামীর শ্যুটিং দেখতে যাওয়ার পথে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি৷ সে বছরই সড়ক দুর্ঘটনা রোধ এবং সড়ক চলাচল সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য ও দাবি নিয়ে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ (নিসচা) নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন ইলিয়াস কাঞ্চন৷ সমাজসেবায় ২০১৮ সালের একুশে পদক পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেতা৷
-
আলোচিত যত সড়ক দুর্ঘটনা
রাজীব হোসেন
৩ এপ্রিল ঢাকার কারওয়ান বাজারে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে মধ্যে পড়ে প্রথমে হাত হারিয়েছিলেন তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেন৷ মাথায়ও আঘাত পান তিনি৷ এরপর দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন৷ তবে তাঁকে বাঁচানো যায়নি৷ পরে রাজীবের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট৷ দুর্ঘটনার পর দুই বাসের মাঝে এক হাত ঝুলে থাকার ছবি প্রকাশিত হলে সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি আলোচিত হয়েছিল৷
-
আলোচিত যত সড়ক দুর্ঘটনা
মানজারুল ইসলাম রানা
২০০৭ সালের ১৬ মার্চ খুলনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার৷ ২৩ বছর বয়সি রানা জাতীয় দলের হয়ে ছয়টি টেস্ট ও ২৫টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন৷
-
আলোচিত যত সড়ক দুর্ঘটনা
জগলুল আহমেদ চৌধুরী
২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, বাসস-এর সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক জগলুল আহমেদ চৌধুরী কারওয়ানবাজার এলাকায় বাস থেকে নামতে গিয়ে সেই বাসের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন৷
-
আলোচিত যত সড়ক দুর্ঘটনা
নাজিম উদ্দিন
ঢাকা ট্রিবিউনের বিজ্ঞাপন বিভাগের একজন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ছিলেন৷ ১৭ মে শনির আখড়া থেকে মোটর সাইকেলে গুলিস্তানের দিকে যাচ্ছিলেন৷ এই সময় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে দুই বাসের প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ে একটি বাসের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন তিনি৷ ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়৷ নাজিম উদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবারকে কেন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে সম্প্রতি রুল জারি করেছে হাইকোর্ট৷
লেখক: জাহিদুল হক
অন্যদিকে পাঠক রানা এ বিষয়ে কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন৷ যেমন ‘‘আগে রোড মনিটরিং সিস্টেম করতে হবে৷ নির্দিষ্ট গতি, নির্দিষ্ট লাইনে এবং যথাযথ যোগ্যতা আছে কিনা সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে৷ তাছাড়া ওভারটেকিং বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে৷''
তবে পুরোপুরি ভিন্নমত পোষণ করেন ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু মোহাম্মদ রাসেল৷ তিনি কিছুটা হতাশ হয়েই লিখেছেন, ‘‘কোনো লাভ নাই! এরকম হলে দুর্ঘটনা আরও বাড়বে৷ গাড়ি ড্রাইভার, না গাড়ির হেল্পার ড্রাইভ করছে, সেটাই বা মনিটর করবে কে ?''
তবে মহিউদ্দিন মিলাদের মতে, দূর্ঘটনার কারণ মূলত পুরনো গাড়ি৷
পাঠক আলী হোসেন কিন্তু সড়ক দূর্ঘটনা কমাতে নারী চালকের পক্ষে মত দিয়েছেন৷ লিখেছেন, ‘‘নারী চালক চাই৷'' তাঁর ধারণা, ‘‘পুরুষ চালকরা মাদকসেবী৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী